সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)
টিআইবি দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে দেশের নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে সারাদেশে সচেতন নাগরিক কমিটি (ঈড়সসরঃঃবব ড়ভ ঈড়হপবৎহবফ ঈরঃরুবহং-ঈঈঈ)-র নেটওয়ার্ক গড়ে তুলছে। দুর্নীতি হ্রাসে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সনাকসমূহ স্থানীয় পর্যায়ে সেবামূলক খাতে অনুঘটকের ভূমিকায় স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে নিয়োজিত। বাংলাদেশের ৪৫টি এলাকায় টিআইবি’র অনুপ্রেরেণায় সনাক গঠিত হয়েছে।
স্বচ্ছতার জন্য নাগরিক (স্বজন)
বহুবিধ প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সততার সাথে যারা জীবনধারণে অঙ্গীকারাবদ্ধ তাঁদেরকে অনুপ্রাণিত করতে টিআইবি সনাক এলাকাগুলোতে স্বচ্ছতার জন্য নাগরিক বা স্বজন গঠন করেছে। সুনির্দিষ্ট একটি কাঠামো ও ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি অনুযায়ী পরিচালিত হওয়ায় সনাক সদস্য হিসেবে সীমিতসংখ্যক নাগরিককে সম্পৃক্ত করা সম্ভব হয়। কিন্তু এ কাজের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার মতো অনেক মানুষ রয়ে গেছে। তাদের সম্পৃক্ত করতেই স্বজন প্রয়াসের উদ্ভাবন, যা সনাক ও টিআইবি’র দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করছে।
ইয়ুথ এনগেজমেন্ট এ্যান্ড সাপোর্ট (ইয়েস)
দেশের তরুণ সমাজে সচেতনতা সৃষ্টি এবং ভবিষ্যতে দুর্নীতিবিরোধী নেতৃত্ব গঠনের লক্ষ্যেই মূলত টিআইবি ২০০৬ সালে ইয়েস কর্মসূচি গ্রহণ করে। ইয়েস বিশেষভাবে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের তরুণদের শিক্ষা ও কর্ম জীবনে গণতন্ত্র, সুশাসন ও দুর্নীতিবিরোধী মূল্যবোধ সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করে। টিআইবি’র লক্ষ্যকে সামনে রেখে ইয়েস এমন তরুণ নেতৃত্ব সৃষ্টির জন্য কাজ করছে যা ভবিষ্যতে দুর্নীতি প্রতিরোধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। স্থানীয় পর্যায়ে ইয়েস গ্রুপ সংশ্লিষ্ট সনাক এর তত্ত্বাবধানে কার্যক্রম পরিচালনা করে।
ইয়েস ফ্রেন্ডস গ্রুপ
ইয়েস সদস্যদের পাশাপাশি টিআইবি ও সনাকের নেতৃত্বে দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনে আগ্রহী তরুণ-তরুণীদের নিয়ে ইয়েস ফ্রেন্ডস গ্রুপ গঠিত হয়।
সনাকের কার্যক্রমসমূহ:
টিআইবি’র পৃষ্ঠপোষকতায় এবং ইয়েস, স্বজন ও ইয়েস ফ্রেন্ডস গ্রুপের সার্বিক সহযোগিতায় সনাক স্থানীয় পর্যায়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে থাকে। যেমন:
- নিয়মিত সভা: কর্মসূচির পর্যালোচনা ও পরিকল্পনার জন্য সনাক, ইয়েস, স্বজন ও ইয়েস ফ্রেন্ডস গ্রুপের নিয়মিত একক, সমন্বিত ও যৌথ সভা পরিচালনা করে।
- স্থানীয় পর্যায়ের গবেষণা: নির্দিষ্ট ইস্যু ও প্রতিষ্ঠানে বেজলাইন সার্ভে, সিটিজেনস রিপোর্ট কার্ড, জরিপ, ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং ইত্যাদি গবেষণা করে থাকে।
- ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচি: শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও স্থানীয় সরকারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা, মা/অভিভাবক সমাবেশ, সেবাগ্রহীতা/জনগণের মুখোমুখি, তথ্যবোর্ড স্থাপন, পরামর্শ ও অভিযোগ বক্স স্থাপন, লিফলেট/তথ্যপত্র তৈরি, দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা ও আপীল কর্তৃপক্ষের নাম সম্বলিত বোর্ড স্থাপন ইত্যাদি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে।
- প্রচারণামূলক কার্যক্রম: দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনে গণমানুষের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি ও সামাজিক আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য ইয়েস গ্রুপের সহায়তায় সনাক বিভিন্ন সচেতনতামূলক প্রচারণা ও ক্যাম্পেইন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। যেমন- সভা, সেমিনার, কর্মশালা, গণ-নাটক, তরুন সমাবেশ, দুর্নীতিবিরোধী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিক্ষার্থীদের নিয়ে রচনা, বিতর্ক, কুইজ ও চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা, দুর্নীতিবিরোধী কার্টুন প্রদর্শন, বাই-সাইকেল র্যালি, পাঠচক্র, নেটওয়ার্কিং ইত্যাদি।
- তথ্য ও পরামর্শ ডেস্ক (এআই–ডেস্ক): সরকারি ও বেসরকারি সেবা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জনগণের নিকট পৌঁছে দেয়া এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়ার লক্ষ্যে টিআইবি সকল সনাক এলাকায় তথ্য ও পরামর্শ ডেস্ক (এআই-ডেস্ক) গঠন করেছে। এ আই-ডেস্ক গুলোতে এলাকা ভিত্তিক প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর নিয়মিত তথ্যপত্র প্রস্তুত করা হয়। সনাক সদস্যরা এখানে বিভিন্ন বিষয়ে সেবা গ্রহণ করতে আসা জনসাধারণকে প্রয়োজনীয় পরামর্শও প্রদান করে থাকেন। এছাড়া ইয়েস গ্রুপের সদস্যরা ভ্রাম্যমাণ তথ্য ও পরামর্শ ডেস্ক (স্যাটেলাইট এআই-ডেস্ক) পরিচালনার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও স্থানীয় সরকারসহ নানা বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য ও পরামর্শ প্রদান করে থাকে।
- দিবস উদযাপন: দুর্নীতি, সুশাসন, মানবাধিকার, নারী অধিকার. আদিবাসী, প্রতিবন্ধী ও অন্যান্য সুবিধাবঞ্চিতদের অধিকার ইত্যাদি বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবসসমূহ পালন করে থাকে। প্রতিটি দিবস উদযাপনের ক্ষেত্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি প্রতিরোধের উপর গুরুত্ব প্রদান করা হয়। আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস, আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস, আন্তর্জাতিক নারী দিবস, বিশ্ব পানি দিবস, বিশ্ব আদিবাসী দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, বিজয় দিবস উদ্যাপন করে।
- তথ্য অধিকার: টিআইবি মানুষের তথ্য অধিকার নিয়ে কাজ করে। টিআইবি মনে করে তথ্য অধিকার অন্যান্য মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার পূর্বশর্ত। দেশব্যাপী সকল সনাক কর্তৃক প্রতিবছর আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় ‘তথ্যমেলা’ আয়োজন করে থাকে।
- অ্যালাক (অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড লিগ্যাল অ্যাডভাইস সেন্টার): অ্যালাক এর মাধ্যমে দুর্নীতির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত এবং দুর্নীতির চাক্ষুস সাক্ষী জনগোষ্ঠী ও প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইনগত পরামর্শ প্রদান ও অধিপরামর্শ পরিচালনার মাধ্যমে দুর্নীতি রোধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা হয়। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে দুর্নীতির শিকার বা দুর্নীতির চাক্ষুস সাক্ষী ব্যক্তির অভিযোগ গ্রহণ ও অভিযোগ বিশদভাবে বিশ্লেষণ করে করণীয় সম্পর্কে বিনামূল্যে সুষ্পষ্ট আইনী পরামর্শ প্রদান করা হয়।
জাতীয় পর্যায়ে গবেষণা ও পলিসি
নীতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের উদ্দেশ্যে পরিচালিত টিআইবি’র গবেষণা কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। জাতীয় পর্যায়ে পরিচালিত টিআইবি’র গবেষণার ধরণগুলো নি¤œরূপ:
তথ্যানুসন্ধানী গবেষণা: বিভিন্ন সেবা খাত বা সংস্থায় বিদ্যমান দুর্নীতির ধরণ চিহ্নিত করা, এর ব্যাপকতা পরিমাপ করা এবং এর প্রভাবের মাত্রা নিরুপণের উদ্দেশ্যে এ ধরনের গবেষণা পরিচালিত হয়। এর মাধ্যমে নীতিগত সংস্কার বা প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তনের জন্য সুনির্দিষ্ট সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
জাতীয় সততা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ: জাতীয় সততা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণের অংশ হিসেবে টিআইবি জাতীয় সংসদ নিয়ে পার্লামেন্ট ওয়াচ শীর্ষক ধারাবাহিক গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া দেশের জাতীয় সততা ব্যবস্থার অন্যান্য স্তম্ভ যেমন, দুর্নীতি দমন কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশন, বিচার বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, নির্বাচন কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় ইত্যাদির ওপরও গবেষণা পরিচালিত হয়।
সিটিজেনস রিপোর্ট কার্ড: স্থানীয় পর্যায়ে সরকারি সেবামূলক খাতের সেবার মান এবং সেবাগ্রহীতার সন্তুষ্টির মাত্রা নিরূপণে টিআইবি সিটিজেনস রিপোর্ট কার্ড পরিচালনা করছে। এই জরিপের মাধ্যমে কোনো সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সেবা কতটুকু ভাল, সেই প্রতিষ্ঠান সেবাগ্রহীতাদের কতটুকু সন্তুষ্ট করতে পারছে এবং সেই প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা তুলে ধরার সাথে সাথে তা সমাধোনের জন্য সুপারিশ করা হয়। সিটিজেনস রিপোর্ট কার্ড বিভিন্ন সরকারি সেবা, যেমন: শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার, ভূমি ইত্যাদি ক্ষেত্রে দুর্নীতি হ্রাসের সাথে সাথে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার একটি কৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
করাপশন ডেটাবেজ: সংবাদপত্রে প্রকাশিত দুর্নীতির রিপোর্ট থেকে দেশে দুর্নীতির একটি চিত্র পাওয়া যায়। টিআইবি সংবাদপত্রে প্রকাশিত এসব তথ্য নিয়ে তৈরি করে ‘করাপশন ডেটাবেজ’ রিপোর্ট। জাতীয় ও স্থানীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত দুর্নীতি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ও তার নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করে প্রস্তুত করা হয় এই ডেটাবেজ। এটি মূলতঃ একটি কম্পিউটারাইজড্ তথ্যভান্ডার যেখানে দুর্নীতির বিভিন্ন তথ্য সংরক্ষণ করা হয়। টিআইবি ২০০০ সালের জানুয়ারি থেকে এ গবেষণা কার্যক্রম শুরু করেছে। প্রতি ছয় মাস বা এক বছর পরপর এই রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে।
জাতীয় খানা জরিপ: এ জরিপের মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশে দুর্নীতির ধরণ ও বিস্তারসহ দুর্নীতির উৎস নির্ণয় এবং প্রতিকারের উপায় খুঁজে বের করা হয়। যেসব খাতে জরিপ পরিচালনা করা হয় তার মধ্যে আছে: শিক্ষা বিভাগ, স্বাস্থ্য সেবা, ভূমি প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, কর বিভাগ, ব্যাংকিং, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, স্থানীয় সরকারের সালিশ ব্যবস্থা ও ত্রাণ এবং পেনশন।
কার্যপত্র: টিআইবি জনগণের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সমসাময়িক ইস্যুতে কার্যপত্র তৈরি করে। সুশাসনকে ব্যাহত করতে পারে এমন জনগুরুত্বপূর্ণ নীতিগত পরিবর্তন বা তার উদ্যোগের ওপর আলোচনার সূচনা করার লক্ষ্যে এ ধরণের কার্যপত্র প্রকাশ করা হয়।
ফেলোশীপ: বাংলাদেশে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সুনির্দিষ্ট গবেষণা প্রস্তাবনার ভিত্তিতে টিআইবি ফেলোশীপ প্রদান করে থাকে। গবেষণার উদ্দেশ্য ও আওতার ওপর ভিত্তি করে ফেলোশীপ এর ব্যাপ্তিকাল ছয় থেকে নয় মাস পর্যন্ত হয়ে থাকে।
আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন:
দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনসচেনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দুর্নীতি রোধে নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে, টিআইবি’র বিভিন্ন গবেষণা ও জরিপে প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে প্রণীত সুশাসন সম্পর্কিত সুপারিশ বাস্তবায়নে আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ বিভাগের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম হচ্ছে-
- যোগাযোগের অন্যান্য মাধ্যমসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মাধ্যমে গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য প্রচার এবং জনমত গঠন ও দাবি উত্থাপন;
- ইয়েস আন্দোলনের মাধ্যমে তরুণ সমাজকে সম্পৃক্তকরণ;
- নীতি সংস্কার ও প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তনে সরকার, আইন প্রণয়নকারী ও সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত হওয়া;
- দুর্নীতিবিরোধী কাজের ক্ষেত্রগুলো শক্তিশালীকরণে সমমনা প্রতিষ্ঠানের সাথে ইস্যুভিত্তিক অংশীদারিত্ব গঠন;
- অংশীজনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ স্থাপন এবং সমর্থক গোষ্ঠী বৃদ্ধিকরণ; এবং
- আউটরিচ ও গণমাধ্যম প্রচারাভিযান।
অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার, ফেলোশিপ ও প্রশিক্ষণ: বাংলাদেশে দুর্নীতি বিষয়ক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় পেশাদারী উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে টিআইবি ১৯৯৯ সাল থেকে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার’ দিয়ে আসছে। দুর্নীতির ওপর প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত/প্রচারিত শ্রেষ্ঠ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন রচনার জন্য সাংবাদিককে পুরস্কৃত করা হয়। ২০০৭ সাল থেকে আঞ্চলিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন আলাদা শ্রেণি হিসেবে পুরস্কারের জন্য বিবেচনা করা হচ্ছে। ২০১০ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় পর্যায়ে দুর্নীতি বিষয়ক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় প্রশিক্ষণের এবং ২০১২ সাল থেকে ফেলোশিপ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
নিউজলেটার ও ই–ওয়েভস ও প্রকাশনা: দেশে দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমকে উৎসাহিত করা এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে টিআইবি নিয়মিত অনলাইন বাংলা নিউজলেটার ‘ওয়েভস্’ প্রকাশ করে এবং ইংরেজী ই-বুলেটিন ‘ই-ওয়েভস’ প্রকাশ করে। পাশাপাশি নিয়মিতভাবে বিভিন্ন ধরনের যোগাযোগ উপকরণ তৈরি ও বিতরণ করা হয়।
গণমাধ্যম প্রচারণা: দুর্নীতি প্রতিরোধে একটি ওয়াচডগ প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীয় ভূমিকা পালনের পাশাপাশি টিআইবি’র দুর্নীতিবিরোধী প্রয়াসে গণমাধ্যম জোরালো ভূমিকা পালন করে। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক দু’টি গণমাধ্যমই টিআইবি’র কার্যক্রমের ব্যাপক প্রচার করে থাকে। এছাড়া টিআইবি বিভিন্ন বেসরকারি রেডিও স্টেশন ও টেলিভিশন চ্যানেলের সাথে যৌথভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠান, টিভি স্পট প্রচার করে থাকে।
রিপোর্ট করাপশন: জনসাধারণ প্রতিনিয়ত যে ধরনের দুর্নীতির শিকার হন সেগুলোর তথ্য সংগ্রহ করাই হরো রিপোর্ট করাপশন। একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জনগণের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে প্রতিবেদন তৈরি করে নীতি এবং প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তনের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাথে অ্যাডভোকেসি কার্যক্রম পরিচালনা করাই এর মূল উদ্দেশ্য।
সদস্যপদ কার্যক্রম: টিআইবি দেশের সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণে একটি শক্তিশালী দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে এক বৃহৎ প্লাটফর্ম সৃষ্টি করতে চায়। আর এ লক্ষ্যকে বাস্তবায়িত করতে টিআইবি দেশের সকল সচেতন নাগরিক বিশেষ করে যারা দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে আগ্রহী তাদেরকে সদস্যপদ গ্রহণের আমন্ত্রণ জানায়। সদস্যগণ টিআইবি’র লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, নৈতিক আচরণবিধি ও মূল্যবোধের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করেন। সদস্যগণ সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে টিআইবি’র সঙ্গে কাজ করেন।